Cricket: চিপকের মাঠে যেন এক অদ্ভুত দিন পার করল সবাই। বিরাট কোহলি ৩০ বল খেললেন, টাইমিং পেলেন হাতে গোনা কয়েকটাতে। মহেন্দ্র সিং ধোনি নামলেন ন’নম্বরে, রবিচন্দ্রন অশ্বিনের আগে। আর অশ্বিন আউট হতেই দুই দলের সমর্থকরাই যেন অদ্ভুতভাবে উল্লাসে ফেটে পড়লেন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, ৬১৫৫ দিন পর নিজেদের ঘরের মাঠে চেন্নাই সুপার কিংসকে হারাল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।
সবচেয়ে বড় চমকটা এল ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে। চেন্নাইয়ের শান্ত এবং কৌশলী কোচ স্টিফেন ফ্লেমিং অকপটে স্বীকার করলেন—গত কয়েক বছর ধরেই ঘরের মাঠের পিচ ঠিকভাবে বুঝতে পারছেন না তাঁরা।
এই ম্যাচকে ঘিরে প্রধান আলোচনা ছিল, আরসিবি কীভাবে সামলাবে চেন্নাইয়ের স্পিন আক্রমণ? প্রথম ম্যাচেই স্পিনাররা ১১ ওভারে ৭০ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন। অথচ শুক্রবারের ম্যাচে চিত্রনাট্য পুরো উল্টে গেল—একটা ডানদিকে সরে যাওয়া পিচে ম্যাচ হল, আর দৃশ্যপট পুরো বদলে গেল। প্রশ্নটা দাঁড়িয়ে গেল, চেন্নাই পারবে কি আরসিবির পেসারদের সামলাতে? উত্তর: পারেনি।
Table of Contents
🔥Cricket চেন্নাইয়ের ব্যাটিং বিপর্যয়ে দুই পেসারের কারিশমা🌪️

Cricketer জশ হ্যাজলউড ও ভুবনেশ্বর কুমার একসাথে ৭ ওভারে ৪১ রানে ৪ উইকেট নিলেন, আর সেখান থেকেই তৈরি হল চেন্নাইয়ের ঘরের মাঠে রানের হিসেবে সবচেয়ে বড় পরাজয়।
সাদা বলের ক্রিকেটে হ্যাজলউডকে নিয়ে অনেকেই সংশয়ে থাকেন। কিন্তু তাঁর নিখুঁত লাইন-লেংথ, ব্যাক অফ লেংথ থেকে বল করানো এবং বাউন্স আদায় করার ক্ষমতা তাঁকে টি-টোয়েন্টিতেও কার্যকর করে তুলেছে। মজার ব্যাপার, এই রূপান্তরটা শুরু হয়েছিল চেন্নাইয়ের হয়েই, ২০২০-২১ মৌসুমে। এরপর ২০২২ সালে আরসিবিতে যোগ দিয়ে ১২ ম্যাচে ২০ উইকেট নেন তিনি, যার ৭টি ছিল পাওয়ারপ্লেতে।
চোটের কারণে গত দুটি মৌসুমে ছিলেন অনিয়মিত, কিন্তু আরসিবি তবু ১২.৫ কোটি টাকায় তাঁকে ফের দলে টেনেছে। আর একইসঙ্গে ১০.৭৫ কোটি টাকায় এনেছে ভুবনেশ্বর কুমারকে, আইপিএলের ইতিহাসে পাওয়ারপ্লেতে সবচেয়ে সফল বোলার। ৭৩ উইকেট, ৬.৩৯ ইকোনমি, আর ৫৬% ডট বল—অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতা।
গত মৌসুমে আরসিবির বড় দুর্বলতা ছিল এই পাওয়ারপ্লে বোলিং। তাদের পেসাররা নিয়েছিলেন সবচেয়ে কম উইকেট (১৫টি), সবচেয়ে খারাপ গড় (৪৫.৪৬), এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইকোনমি (৯.৩৪)। তাই অভিজ্ঞ হ্যাজলউড-বুবনেশ্বর জুটি আনা ছিল হিসেবি বিনিয়োগ।
🏏 Cricket: শুরুতেই ছিটকে গেল চেন্নাই

চিপকে ম্যাচের দিনে পিচে ছিল সুইং, সিম, ডাবল পেস এবং যথেষ্ট বাউন্স—আর সেই কন্ডিশনে রীতিমতো আগুন ঝরালেন এই দুই পেসার। ১৯৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চেন্নাই শুরুতেই ম্যাচ থেকে ছিটকে গেল। কারণ? দুর্দান্ত লেংথ নিয়ন্ত্রণ। ছয় মিটার লাইনের চেয়ে একটি বলও বেশি ফুলার ছিল না। হ্যাজলউড ৮-১০ মিটার এলাকায় বল করে বারবার ব্যাটসম্যানদের বিপদে ফেললেন।
ম্যাচের প্রথম ওভারে, বিশ্বকাপের ভারতের বিপক্ষে স্পেলটির মতই, চিপকে-র গর্জনকে নিস্তব্ধ করে দিলেন হ্যাজলউড। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে রাহুল ত্রিপাঠী পুল খেলতে গিয়ে উইকেট দিলেন। এরপর রুতুরাজ গায়কোয়াড়ও একই পরিণতির শিকার হলেন।
ভুবনেশ্বর এরপর দিপক হুডাকে সামলে নিয়ে দুর্দান্ত একটি গুড লেংথ ডেলিভারিতে আউট করলেন। তখন স্কোর ২৬/৩, আর ম্যাচ কার্যত শেষ। পুরো Cricket আইপিএল ইতিহাসে মাত্র দুইবার এমন পরিস্থিতি থেকে ১৮০+ রান তাড়া করে জিতেছে কোনো দল।
চেন্নাইয়ের হয়ে শুধু খালিল আহমেদই পিচ বুঝে বোলিং করতে পেরেছেন, কিন্তু আরসিবির হাতে ছিল আরও অস্ত্র—তৃতীয় পেসার যশ দয়াল, যিনি এক ওভারেই দুই উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন।
পুরনো দিনের ‘চেন্নাই বনাম Cricket আরসিবি’ নাটকে এই প্রথম নতুন দৃশ্য এল। আরসিবি ছিল প্রস্তুত, হ্যাজলউড-বুবনেশ্বর ছিলেন নিখুঁত রূপে। স্পিন-ভিত্তিক ম্যাচে সিমারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিল। এক সময় যারা নিজেদের ঘরের মাঠে অপ্রতিরোধ্য ছিল, সেই চেন্নাই এখন হয়তো তাদের সেই দাপট হারাচ্ছে।